ট্র্যাভেলিং চট্টগ্রাম ডেস্ক: পর্যটকদের রাত্রি যাপন নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত হওয়ায় দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে রাতের সৌন্দর্য উপভোগে সুযোগ শেষ হতে চলেছে এ মৌসুমেই।
এদিকে প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর ২৫ অক্টোবর থেকে টেকনাথ-সেন্টমার্টিনের পথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে।
তাই এখনই সময় প্রবাল দ্বীপে ঘুরে আসার। আর কেউ যদি বন্ধুদের নিয়ে পূর্ণিমা রাতে সেন্টমার্টিনের অপার্থিব সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান তাহলে এটাই শেষ সুযোগ।
১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সেন্টমার্টিনে রাত যাপন নিষিদ্ধ করার নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা জানান বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
দ্বীপটির পরিবেশ রক্ষায় গঠিত আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটি আগামী বছরের মার্চ থেকে সেন্টমার্টিনে রাত যাপন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ সিদ্ধান্তের ফলে দ্বীপের জীববৈচিত্র্য রক্ষার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যও ফিরে আসবে বলে পরিবেশবাদীরা মনে করেন।
আবার বিপরীতে পর্যটন শিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা খাত সংশ্লিষ্টদের।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্ম কামাল হোসেন বলেন, পর্যটন শিল্পে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না। বর্তমানে পর্যটকদের যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে সেন্টমার্টিন দ্বীপ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
টুয়াক কক্সবাজারের চেয়ারম্যান এম এ হাসিব বাদল বলেন, সেন্টমার্টিনের জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্থ হবে। পাশাপাশি পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগকারী, ট্যুর অপারেটরস, গেস্ট হাউস মালিকরা অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ হব।
৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে বর্ষা ছাড়া বছরের অন্যান্য সময় এখানে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে।
গত কয়েক বছরে ভরা মৌসুমে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক দ্বীপটিতে ভিড় করছেন।
বর্ধিত চাহিদা মেটাতে গড়ে উঠেছে বেশকিছু হোটেল-মোটেল ও কটেজ। পর্যটক সংখ্যা বাড়ার সাথে বেড়েছে পরিবেশ দূষণের মাত্রাও।
সৈকতে প্লাস্টিক বর্জ্য এবং দ্বীপ জুড়ে নানা রকম বর্জ্য ছড়িয়ে থাকায় পরিবেশের ভারসাম্যও নষ্ট হতে থাকে। দ্বীপের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন পরিবেশবাদীরা।
সেভ দ্যা নেচার কক্সবাজার এর চেয়ারম্যান আ ন ম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সেন্টমার্টিনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো সিস্টেম নেই। আইন করে দ্বীপে প্লাস্টিক পন্য, চিপসের প্যাকেট, পানির বোতল এসব পরিহার করতে হবে।
ভ্রমণ পিপাসুরা নীল জলের এই দ্বীপটিতে শেষ বারের মত রাত কাটানোর সুযোগ নিতে পারেন।
টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের পথে চলাচল করে কেয়ারি সিন্দাবাদ, কেয়ারি ক্রজ অ্যান্ড ডাইন এবং বে-ক্রুস নামের তিনটি পর্যটকবাহী জাহাজ।
জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ায় সেন্টমার্টিনে আবার পর্যটক আনাগোনা শুরু হয়েছে।
সেখানকার হোটেল, কটেজ, আবাসিক হোটেল ও খাবার হোটেলগুলোতে মূল্য তালিকা টাঙ্গানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ভাটার সময় পর্যটকরা যাতে সাগরের পানিতে না নামেন সে বিষয়ে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে।
গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ছেড়াদ্বীপ ও গলাচিপে অংশে পর্যটক প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আগামী মার্চ থেকে অনলাইনে নিবন্ধনের মাধ্যমে দৈনিক সীমিত সংখ্যক পর্যটক যাতায়াত পদ্ধতি চালু করা হবে বলেও জানা গেছে।#
কনটেন্ট এডিটর